“আপনি নিশ্চিত এটাই…?”
আমার অসম্পূর্ণ
প্রশ্নে প্রোফেসরের অভিব্যক্তির কোনও পরিবর্তন বুঝলাম না। তিনি তখনও বাহ্যজ্ঞানলুপ্ত
হয়ে সারকাফেগাসের দিকেই চেয়ে রয়েছেন। সেটার ভাস্কর্যখচিত প্রকাণ্ড পাথুরে ঢাকনা অভিকর্ষ
বলের ভ্রূক্ষেপ না করে অবলীলায় শূন্যে ভেসে আছে। মধ্যিখানের ইঞ্চি তিনেকের ব্যবধান
দিয়ে উপচে পড়ছে শীতল নীলাভ সাদা জ্যোতি।
“একেবারে নির্ভুল,”
প্রোফেসর হাতের প্যাপাইরাসের প্রাচীন চৈনিক স্ক্রোল আলোয় তুলে ধরলেন। “ইউয়ান তাইজু,
তথা চেঙ্গিস খান এখানেই শুয়ে আছেন।“
দেখলাম, সমাধিচত্বরের
চারিদিকে, ভগ্নপ্রায় থাম, মূর্তি এবং ধ্বংসস্তূপের দেওয়ালে মঙ্গোল অতীতের সুস্পষ্ট
ছাপ ছড়িয়ে রয়েছে। যদিও, স্ক্রোলটির পাঠোদ্ধার ব্যতীত গোবি-অলতাইয়ের ক্ষুরধার শৈলশিরার
আড়ালে অদ্যাবধি অনাবিষ্কৃত মন্দির নগরীটির সন্ধান পাওয়া ছিল অসম্ভব। প্রোফেসরের কৃতিত্বে
আজ আমরা ইতিহাসের ক্রূরতম শাসকের অন্তিম শয়নস্থল আবিষ্কার করেছি। কিন্তু আদিম শবাধারের আজব লেভিটেটিং আচ্ছাদন অথবা
এই অপার্থিব আলোর রহস্য উনি এখনও সমাধা করতে পারেননি।
“কী লেখা?”
উইঘুর লিপি খোদিত প্রস্তরফলকের দিকে ওনার দৃষ্টি আকর্ষণ করলাম।
“সময়ের আবর্তন,”
চিন্তিত স্বরে বললেন তিনি। “আসুন নকুড়বাবু, একবার উঁকি মেরে দেখা যাক ভিতরটা।“
ইয়াকের চামড়ার
বিছানায় ছোট্ট তেমুজিন ছটফটিয়ে পাশে শোয়া মা হোলানকে জড়িয়ে ধরল। আবার সে দেখেছে সেই
একই দুঃস্বপ্ন। একটা চৌকো গর্তের ফোঁকর দিয়ে দুজন লোক অবাক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে
আছে। অদ্ভুত তাঁদের চেহারা। দাড়িওয়ালা বুড়োটা হাত বাড়িয়ে দুর্বোধ্য ভাষায় কথা বলল।
তেমুজিনের পরিষ্কার মনে আছে শব্দগুলো, “আমি শঙ্কু, ত্রিলোকেশ্বর শঙ্কু”।।